১৪ বছরে সেই মণি-মুক্তা, হতে চান চিকিৎসক

আলোচিত যমজ বোন মণি-মুক্তার জন্মদিন আজ। এবার ১৪ বছরে পা দিয়েছে তারা। দুজনে স্থানীয় ঝাড়বাড়ী দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। ১৩ বছর আগে মণি-মুক্তা জোড়া লাগানো অবস্থায় জন্ম নেয়। পরে চিকিৎসাবিজ্ঞানের কল্যাণে দুই বোনকে আলাদা করা হয়। সোমবার (২২ আগস্ট) মণি-মুক্তার জন্মদিন পালন করা হবে বলে জানা গেছে।

দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার শতগ্রাম ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামের জয় প্রকাশ পাল ও কৃষ্ণা রানী পাল দম্পতির মেয়ে মণি-মুক্তা। ২০০৯ সালের ২২ আগস্ট পার্বতীপুর ল্যাম্ব হাসপাতালে সিজারিয়ান সেকশনে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মণি এবং মুক্তা জোড়া লাগা অবস্থায় জন্ম নেয়। এরপরে মা-বাবার কোলে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে মণি-মুক্তা এখন ঝাড়বাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ালেখা করছে।

মণি-মুক্তার বাবা জয় প্রকাশ পাল জানান, মণি মুক্তা সুস্থ এবং ভালো আছে। লেখাপড়ার পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে নাচ শিখছে। উপজেলার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে তারা। করোনা পরিস্থিতির কারণে গত দু’বছর ঘরোয়া পরিবেশে জন্মদিন পালন করা হলেও এ বছর বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও মণি-মুক্তার বন্ধুবান্ধবসহ প্রতিবেশীরা কেক কেটে জন্মবার্ষিকী পালন করা হয়।

দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়ে মণি-মুক্তা বলে, আমরা চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করতে চায়। দেশবাসীর দোয়া ও সহযোগিতা পেলে আমরা অবশ্যই আমাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারব এবং সমাজের অবহেলিত মানুষের পাশে থাকব।

বাংলাদেশে প্রথম অস্ত্রপোচারের মাধ্যমে জোড়া লাগানো শিশুর সফল পৃথককরণ করা হয়। ২০১০ সালের ৩০ জানুয়ারি ঢাকা শিশু হাসপাতালে মণি-মুক্তাকে ভর্তি করা হয়। ৮ ফ্রেব্রুয়ারি ঢাকা শিশু হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. এ আর খানের সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মণি-মুক্তা ভিন্ন সত্ত্বা ও ভিন্ন জীবন লাভ করে। তখন থেকেই বাংলাদেশের চিকিৎসাবিজ্ঞানে সৃষ্টি হয় এক নতুন ইতিহাস।